রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ক্রমশই বিপজ্জনক হচ্ছে, বলছে রিপোর্ট

খুন, জখম, ধর্ষণ, ডাকাতি। কার্যত প্রতি ক্ষেত্রেই এরাজ্যে অপরাধ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে বিপজ্জনক দিকে এগোচ্ছে, ২০১২ সালের রিপোর্টে তা স্পষ্ট।

Updated By: Jun 12, 2013, 09:13 AM IST

খুন, জখম, ধর্ষণ, ডাকাতি। কার্যত প্রতি ক্ষেত্রেই এরাজ্যে অপরাধ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে বিপজ্জনক দিকে এগোচ্ছে, ২০১২ সালের রিপোর্টে তা স্পষ্ট।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিভিন্ন তথ্য পরিসংখ্যান--
মে, ২০১১
 
২০১১ সালের মে মাসে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে নতুন সরকার। সেই হিসেবে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো ২০১১ সালের অপরাধ সংক্রান্ত যে পরিসংখ্যান পেশ করে, তার কিছুটা অংশ ছিল পূর্বতন বাম সরকারের। তাই সেই পরিসংখ্যান নিয়ে বারবার বিভিন্ন মন্তব্য করা হয়েছে শাসকদলের তরফে। কিন্তু এবার রাজ্য প্রশাসনের দেওয়া তথ্যই বলছে, ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরাধ দ্রুত হারে বেড়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো ২০১২ সালের যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে,
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে খুনের সংখ্যা ছিল ২১০৯টি
 
২০১২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২২৫২টি
অর্থাত্‍ এক বছরে খুনের ঘটনা বেড়েছে ১৪৩টি
 
শতাংশের হিসেবে এই অপরাধের হার বৃদ্ধি ৬.৮
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে খুনের চেষ্টার ঘটনা ঘটে ২২৪২টি
 
২০১২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৮৫৪টি
 
অর্থাত্‍ এক বছরে খুনের চেষ্টার ঘটনা বেড়েছে ৬১২টি
 
শতাংশের হিসেবে এই অপরাধের হার বৃদ্ধি ২৭.৩
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে অনিচ্ছাকৃত খুনের ঘটনার সংখ্যা ৪৮৬
 
২০১২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৫২২
 
অর্থাত্‍ এক বছরে অনিচ্ছাকৃত খুনের সংখ্যা বেড়েছে ৩৬টি
 
শতাংশের হিসেবে এই অপরাধের হার বৃদ্ধি ৭.৪
অপহরণের ক্ষেত্রেও রাজ্যে অপরাধ বৃদ্ধির সংখ্যা যথেষ্ট উদ্বেগের।
 
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে মোট ৪২৮৫টি অপহরণের ঘটনা ঘটে
 
২০১২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১১৭
 
অর্থাত্‍ এক বছরে অপহরণের সংখ্যা বেড়েছে ৮৩২ 
 
শতাংশের হিসেবে এই অপরাধের হার বৃদ্ধি ১৯.৪
 
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য বলছে, দুহাজার বারো সালে রাজ্যে যারা অপহৃত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই হয় মহিলা নয় শিশুকন্যা। রাজ্যে নারী নির্যাতনের সমস্যা কতটা প্রকট, তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে এই তথ্যে।
অপরাধের পরিসংখ্যানে আশ্চর্যজনক ভাবে ব্যতিক্রম শুধু ধর্ষণ। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা মহিলাদের সামাজিক নিরাপত্তার ভিত টলিয়ে দিয়েছে। তবু রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তা হল এইরকম।
২০১১ সালে রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনা ২৩৬৩
 
২০১২ সালে তা কমে হয়েছে ২০৪৬
 
অর্থাত্‍ এক বছরে ধর্ষণ কমেছে ৩১৭টি
 
শতাংশের হিসেবে অপরাধ হ্রাসের হার ১৩.৪
কিন্তু একথা মনে রাখতে হবে যে, ধর্ষণের ঘটনা সরকারি ভাবে নথিভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সামাজিক সমস্যা থাকে। প্রথমত, নিগৃহীতা বেশিরভাগ সময়ই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে সংকোচ বোধ করেন। তাই থানা-পুলিস এড়িয়ে যান তাঁরা। এই অনীহার কারণে ধর্ষণের ঘটনা সরকারি ভাবে নথিভুক্ত হয় না। আবার অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিসের তরফে ফিরিয়ে দেওয়ার উদাহরণও রয়েছে ভুরিভুরি।
এবার আসা যাক ডাকাতির পরিসংখ্যানে--
 
২০১১ সালে রাজ্যে ডাকাতির সংখ্যা ২৩৬টি
 
২০১২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৭৯টি
 
অর্থাত্‍ এক বছরে ডাকাতি বেড়েছে ৪৩টি
 
শতাংশের হিসেবে ডাকাতি বৃদ্ধির হার ১৮.২
অর্থাত্‍ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, যে এরাজ্যে অপরাধ ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
 

.