আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যে রমরমিয়ে চলছে কিডনি পাচার

গরিব মানুষের অবস্থার সুযোগ নিয়ে সামান্য টাকার বিনিময়ে কিডনি হাতিয়ে নিচ্ছে দালালরা। রাজ্যজুড়ে রমরমিয়ে চলছে অবৈধ কিডনির ব্যবসা। আইন আর সরকারি নিয়মকানুনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছে কিডনি কারবারিরা।  

Updated By: Jun 8, 2016, 09:56 PM IST
আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যে রমরমিয়ে চলছে কিডনি পাচার

ওয়েব ডেস্ক : গরিব মানুষের অবস্থার সুযোগ নিয়ে সামান্য টাকার বিনিময়ে কিডনি হাতিয়ে নিচ্ছে দালালরা। রাজ্যজুড়ে রমরমিয়ে চলছে অবৈধ কিডনির ব্যবসা। আইন আর সরকারি নিয়মকানুনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছে কিডনি কারবারিরা।  

জালিপাড়ায় প্রায় সবারই পেটে এই কাটা দাগ। দুটো কিডনিই আছে, গ্রামে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। অভাবের তাড়নায় তাঁরা কিডনি বিক্রি করছেন। ২০১২-র মিডিয়ার দৌলতে সামনে আসে এখবর। গ্রামবাসীরা বলছেন, বেআইনি কারবার এখনও বন্ধ হয়নি।

২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব এ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে জানান, কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে তাঁর রাজ্যের ১৪ জন প্রতারিত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিষয়টি জানালে আলিপুর আদালতের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিসকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই তদন্তে ধরা পড়ে রাজ্যে রমরমিয়ে চলছে বেআইনি কিডনির কারবার।

ডোনারের কাছ থেকে দু-তিন লাখ টাকার বিনিময়ে কিডনি হাতিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকায় তা বিক্রি করে দিচ্ছে দালালরা। কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিত্‍সকদের মদতে অবাধে চলছে এই বেআইনি কারবার। আলিপুর আদালত মেডিকা হাসপাতাল এবং হাসপাতালের পদস্থ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সমন জারি করে। সেই মামলা এখনও চলছে। আর বেআইনি কিডনি চক্রের কারবারও যে অবাধে চলছে তা দেখা গেল দিল্লি পুলিসের হাতে কিংপিন রাজকুমারের গ্রেফতারে।

কী বলছে এই আইনে?

হিউম্যান অরগ্যান ট্রান্সপ্ল্যান্ট অ্যাক্টে বলা হয়েছে, অঙ্গদাতা গ্রহীতার নিকটাত্মীয় না হলে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যাবে না। যদি কোনও অঙ্গদাতা জানান গ্রহীতা নিকটাত্মীয় না হলেও ভালবাসা ও বন্ধুত্বের কারণে তিনি অঙ্গদান করতে চান তাহলে অঙ্গদানের আগে নির্দিষ্ট অথরাইজেশন কমিটির ছাড়পত্র লাগবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের এই ফাঁকটুকুর সুযোগ নিচ্ছে কিডনি কারবারিরা। দাতা ও গ্রহীতার কোনও পূর্ব পরিচিতি না থাকলেও মিথ্যা বন্ধুত্বের কথা বলে কিডনি দানের ব্যবস্থা হচ্ছে। বহুক্ষেত্রে এই অথরাইজেশন কমিটিও তাদের কাজ ঠিকমতো করছে না। জাল নথি তৈরি করে দাতা ও গ্রহীতা নিকটাত্মীয় বলেও অনেকক্ষেত্রে দেখানো হচ্ছে।

কেন পশ্চিমবঙ্গে কিডনি পাচার চক্রের রমরমা?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচলিত প্রথায় নিকটাত্মীয় না হলে অন্যান্য রাজ্যে কিডনি দানের অনুমতি জোগাড় অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং জটিল প্রক্রিয়া। তুলনায় এ রাজ্যে কিডনি দানের প্রক্রিয়া অনেক সহজ। বিশেষজ্ঞদের মতে মুমূর্ষু রোগীর উপকারের জন্য সরকারি নিয়মকানুনে এ রাজ্যে যতটুকু ছাড় রয়েছে সেটাকেই হাতিয়ার করে গরিব মানুষের কিডনি কেড়ে নিচ্ছে দালালরা।  

 

.