Garfa Murder: 'তোর দিদির দেহ আমার ফ্ল্যাটে,' বোনকে ফোনের পরই রেললাইনে মিলল মালিকের দেহ!
গড়ফায় ফ্ল্যাটে মহিলার দেহ উদ্ধার কান্ডে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোবর্ধন শেঠ ছিল বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে রয়েছে।
রণয় তেওয়ারি: "তোর দিদির দেহ আমার ফ্ল্যাটে পড়ে রয়েছে। যা গিয়ে দেখে নে।" ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল ৪টে ৪৮মিনিট। গড়ফা থানা এলাকার শরৎ বোস কলোনির বাসিন্দা গোবর্ধন শেঠের কাছ থেকে এই ফোন পেয়ে আঁতকে উঠেছিলেন বেলেঘাটা চাউল পট্টির বাসিন্দা মুন্নি সিং। এরপরই পরিবারের সদস্যরা ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন, গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে মুন্নির দিদি শান্তি সিংয়ের নিথর দেহ।
খবর চাউর হতেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। খবর যায় গড়ফা থানায়। একইসঙ্গে ঘটনাস্থলে আসেন লালবাজারের গোয়েন্দারাও। পরে পুলিস জানতে পারে, গোবর্ধন শেঠ নামে যে ব্যাক্তির ওই ফ্ল্যাটটি, তাঁর দেহ-ও উদ্ধার হয়ছে ঢাকুড়িয়ার কাছে রেললাইন থেকে। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পেরেছে, পেশায় বাস চালক গোবর্ধন শেঠ বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে রয়েছে। তবে তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না গোবর্ধন শেঠের। ৭-৮ বছর আগে শরৎ বোস কলোনির এই ফ্ল্যাটটি কেনেন তিনি। তারপর থেকে সেখানেই থাকতেন গোবর্ধন শেঠ। বেলেঘাটা চাউল পট্টির বাসিন্দা শান্তি সিং প্রায়ই আসত গোবর্ধন শেঠের এই ফ্ল্যাটে। বাড়িতে রান্নার কাজ করা ছাড়াও তাঁকে দেখাশোনা করতেন শান্তি। ইদানিং দুজনের মধ্যে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
আরও জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালেও গোবর্ধনের ফ্ল্যাটে আসেন শান্তি। রান্নাবান্নাও করেন। কিন্তু সবই পড়েছিল। সূত্রের খবর, দুজনের মধ্যে মঙ্গলবার ঝামেলা হয়। যার কারণ ফ্ল্যাট ও টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিষয়। তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, গোবর্ধনের ফ্ল্যাট ও টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিষয়েকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই ঝামেলা চলছিল। মঙ্গলবারও তাই নিয়ে ঝামেলা হয়। আর তার জেরেই শান্তিকে খুন করে গোবর্ধন শেঠ নিজেও আত্মঘাতী হন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
শান্তির বৃদ্ধা মা-কে এখনও জানানো হয়নি মেয়ের মৃত্যুর খবর। অন্যদিকে শান্তির বোন মুন্নি সিং পুলিসকে জানিয়েছেন, দিদিকে বারণ করা হত গোবর্ধনের বাড়ি যেতে। তারপরেও দিদি যেত। সবদিক খতিয়ে দেখে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। শান্তির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিস।