মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্য বইয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা পেলেন সন্ত্রাসবাদী তকমা!
ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশ। বিদেশি শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতেই তাঁরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। এই বিপ্লবীরা কী তাহলে সন্ত্রাসবাদী? পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের বইয়ে কিন্তু তাঁদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে।
কলকাতা: ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশ। বিদেশি শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতেই তাঁরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। এই বিপ্লবীরা কী তাহলে সন্ত্রাসবাদী? পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের বইয়ে কিন্তু তাঁদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে।
পর্ষদের ক্লাস এইটের ইতিহাস বইয়ে বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ নামে একটি অনুচ্ছেদে ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন জায়গা পেয়েছে। সেখানে ক্ষুদিরাম বসু-প্রফুল্ল চাকীদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইংরেজ আমলে তত্কালীন সরকার এই বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করলেও স্বাধীন ভারত কিন্তু এঁদের স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবেই মনে রেখেছে। রাজ্য সরকারের অনুমোদিত পাঠ্য বইয়ে হঠাত্ তাঁরা সন্ত্রাসবাদী বলে চিহ্নিত করায় তাই বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
সমালোচনায় সরব হয়েছেন ঐতিহাসিকরাও। একই মানুষ একজনের কাছে সন্ত্রাসবাদী আরেকজনের কাছে সেই আবার স্বাধীনতা সংগ্রামী। শিক্ষকেরই দায়িত্ব ছাত্রদের সেই পার্থক্যটা বুঝিয়ে দেওয়ার। মনে করেন ঐতিহাসিক শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতীয় বিপ্লবীদের কঠিন আইনের আওতায় আনতেই ব্রিটিশ সরকার তাদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করেছিল। স্বাধীন দেশে তাদের বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী হিসেবেই মনে রাখা উচিত বলে মনে করেন অধ্যাপক অমল দাস।
ক্ষুদিরাম-প্রফুল্ল চাকিরা সন্ত্রাসবাদী। এই তথ্য কম বয়সের ছাত্রছাত্রীদের ইতিহাসের ভিতটাই নড়বড়ে করে দেবে বলে মনে করেন ইতিহাসের অধ্যাপক নির্বাণ বসু।
স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করার তীব্র বিরোধীতা করেছেন ঐতিহাসিক অতীশ দাশগুপ্ত। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ইতিহাসকে গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
বর্তমানে সন্ত্রাসবাদী শব্দটি র অর্থ যথেষ্টই নেতিবাচক। তাই ক্ষুদিরাম-প্রফুল্ল চাকিদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কখনই সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না বলে মনে করেন ইতিহাস কংগ্রেসের সদস্য সুস্নাত দাস।