Nirmala Mishra : 'অপূরণীয় ক্ষতি', নির্মলা মিশ্রের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন সঙ্গীতশিল্পীদের
প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী বঙ্গবিভূষণ নির্মলা মিশ্র (Nirmala Mishra)। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা সঙ্গীত জগত। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। শনিবার মধ্যরাতে নিজ বাসভবনেই প্রয়াত হয়েছেন গায়িকা। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবারকে জানিয়েছেন সমবেদনা। শিল্পীর মৃত্য়ুতে শোকপ্রকাশ করেছেন হৈমন্তী শুক্লা, তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, ইন্দ্রাণী সেন, রূপঙ্কর বাগচীর মতো শিল্পীরা। ভাগ করে নিয়েছেন তাঁদের প্রিয় নির্মলাদির সঙ্গে কাটানো বেশকিছু স্মৃতি।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো : প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী বঙ্গবিভূষণ নির্মলা মিশ্র (Nirmala Mishra)। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা সঙ্গীত জগত। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। শনিবার মধ্যরাতে নিজ বাসভবনেই প্রয়াত হয়েছেন গায়িকা। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবারকে জানিয়েছেন সমবেদনা। শিল্পীর মৃত্য়ুতে শোকপ্রকাশ করেছেন হৈমন্তী শুক্লা, তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, ইন্দ্রাণী সেন, রূপঙ্কর বাগচীর মতো শিল্পীরা। ভাগ করে নিয়েছেন তাঁদের প্রিয় নির্মলাদির সঙ্গে কাটানো বেশকিছু স্মৃতি।
হৈমন্তী শুক্লা, সঙ্গীতশিল্পী : কারোর চলে যাওয়া আমরা কখনওই ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারি না। তবে নির্মলাদির বিষয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছি। কারণ, উনি প্রায় ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিছানায় ছিলেন, খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। পুরনো কিছু কথা খুব মনে পড়ে, উনি একবার রবীন্দ্রসদনে গান গাইতে এলেন, তার আগে ওঁর হার্ট অপারেশন হয়েছে। আমায় দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, আমায় দেখে কী মনে হচ্ছে? যমরাজকে ল্যাং মেরে চলে এসেছি। নির্মলাদির সেই সব কথাই আজ খুব মনে পড়ছে। একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। উনি আমাদের আত্মীয়র মতো ছিলেন। আমার বাবাও ওঁকে খুব স্নেহ করতেন। আমি কোনও জায়গায় ভুল গাইলে উনি বকা দিতেন, বলতেন তুই ওটা এভাবে গাইলি কেন? এটা তো এইভাবে গাওয়া উচিত ছিল।
ইন্দ্রাণী সেন, সঙ্গীতশিল্পী : নির্মলাদির গান ছোট থেকেই শুনে এসেছি। ওঁর গান শুনে রেডিওতে গান করতাম, আবার সেটা ওঁকে শুনতে বলতাম। নির্মলাদি সেটা শুনে নিজের মতামত জানাতেন। কী অসাধারণ সব গান আছে ওঁর। তবে খুব ভুগছিলেন, উনি চলে গিয়ে শান্তি পেয়েছেন। ঈশ্বরের কাছে ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। ওঁর সঙ্গে শেষ কথা অনেকদিন আগে হয়েছিল, তখন অবশ্য উনি সুস্থ ছিলেন। কখনও কোনও অনুষ্ঠানে আসতেন, সকলকে হইহই করে মাতিয়ে রাখতেন। খুব রসিক মানুষ ছিলেন।
তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, সরোদবাদক: কী বলব, কিছু বলার নেই। বংলা গান যতদিন থাকবে, নির্মলাদির গান ততদিন বেঁচে থাকব। আমাদের ছোটবেলা এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও নির্মলা মিশ্র একটা বিশেষ নাম। ওইরকম সচেতনতা নিয়ে আবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে গান খুব কম মানুষই গাইতে পারতেন। ওই গলায় কী কী গান গেয়েছেন ভাবা যায় না। এটা আমার ব্যক্তিগতও ক্ষতি, কারণ আমার দিদির মতো ছিলেন। ওঁর সঙ্গে আমার অন্যরকম সম্পর্ক ছিল। নির্মলাদি বেশ কয়েকবছর ধরে অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু তবুও তো ছিলেন, সবাই চলে যাচ্ছেন মাথার উপর থেকে। সেটাই খারাপ লাগে। ওঁর মতো শিল্পী হয়ত আর হবে না। বলব, দিদি যেখানেই তুমি থাকো, শান্তিতে থাকো, অনেক প্রণাম নিও।
রূপঙ্কর বাগচী, সঙ্গীতশিল্পী : নির্মলাদির সঙ্গে বহু অনুষ্ঠানে একসঙ্গে কাটিয়েছি। উনি বয়োজ্যেষ্ঠ হলেও বন্ধুর মতোই আচরণ করতেন। আমার গান গেয়ে বলতেন, এই গানটা তুই এভাবে গেয়েছি। উনি ভীষণ ভালো নকল করতে পারতেন সকলের। স্বয়ং মা সরস্বতী বলা যায়, ওইরকম একটা কণ্ঠ নিয়ে খুব কম মানুষই জন্মান। তবে শেষ কয়েকবছর ধরে খুব কষ্টের মধ্যে ছিলেন। ওঁর গান আমাদের মধ্যে সারাজীবন থেকে যাবে।