Dev on Technician's Strike: 'মুখ্যমন্ত্রী মহানায়ক সম্মান দিলেন আর সেই বুম্বাদারই শ্যুট বন্ধ করল ফেডারেশন' সরব দেব
Federation-Director's Guild Conflict: শনিবার সকাল থেকেই টেকনিশিয়ান স্টুডিয়োতে অচলাবস্থা। শুক্রবারই ডিরেক্টরস গিল্ডের তরফে জানানো হয় যে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। সেইমতো ২৭ জুলাই অর্থাত্ আজ শনিবার সকাল থেকেই পরিচালক হিসাবে ছবির শ্যুটিং শুরু করতে পারেন তিনি। শুক্রবার মধ্যরাতে ফেডারেশন জানায় যে রাহুলকে পরিচালক হিসাবে নয়, ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার হিসাবেই কাজ করতে হবে। শনিবার সকালে ছবির শ্যুটিং করতে গিয়ে পরিচালক রাহুলকে জানানো হয় যে রাহুল যদি পরিচালক হিসাবে সেটে আসেন, তাহলে টেকনিশিয়ানরা কর্মবিরতিতে যাবেন। কথা মতো কাজ। শনিবার টেকনিশিয়ানদের কর্মবিরতির কারণে বন্ধ হয়ে যায় শ্যুটিং। এবার এই প্রসঙ্গে প্রতিবাদে দেব।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: টেকনিশিয়ানদের(Technician) আচমকা কর্মবিরতিতে থমকে গেছে টালিগঞ্জ(Tollywgunge)। সকাল সকাল সেটে পৌঁছেও শ্যুট করতে পারলেন না প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়(Prosenjit Chatterjee)। টেকনিশিয়ানদের দাবি, রাহুল মুখোপাধ্যায়(Rahool Mukherjee) পরিচালনা করলে তাঁরা কাজ করবেন না। যেখানে ডিরেক্টরস গিল্ড(Director's Guild) রাহুলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, সেখানে কীসের আপত্তি টেকনিশিয়ানদের এবং ফেডারেশনের। টেকনিশিয়ানদের এহেন আচরণে বিরক্ত দেব(Dev)। শনিবার সকালে অশান্তির আঁচ পেয়ে তিনিও পৌঁছে যান টেকনিশিয়ান স্টুডিয়োয়(Technician Studio)।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দেব বলেন, 'আমরা সবাই চাই কাজ হোক, কাজ আটকে থাকুক, এটা কেউ চায় না। আমরা সবাই এই কাজ বন্ধ রাখার বিরুদ্ধে, কারণ এটা ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি। এই যে কারণ ছাড়া কাজটা বন্ধ রাখা হল, সেটা দুঃখজনক। এমনিই কাজ কমে যাচ্ছে। আগে মুম্বই থেকে যে পরিমাণ কাজ কলকাতায় আসত, তা ৯০ শতাংশ কমে গেছে। খাদানে আমি ৪০০-৫০০জনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। কেউ বলতে পারবে না যে কারোর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি। কিন্তু এভাবে যদি বিনা কারণে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়, যদি বলা হয় যে আমরা টেকনিশিয়ানদের বিরুদ্ধে, তাহলে তা ভুল ন্যারোটিভ তৈরি করে বাংলা সম্পর্কে'।
অভিনেতা-প্রযোজক আরও বলেন, 'এমনিতেই বাংলায় সারা বছরে ১০টাও ভালো ছবি তৈরি হয় না, তার উপর যদি কাজ বন্ধ থাকে। তাহলে বাংলার বাইরে খারাপ বার্তা যায়। রাজ একটা হিন্দি ওয়েবসিরিজ করছে সেটা এখানে শ্যুট করতে দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশের চরকি এসেছিল ১২টা ওয়েব সিরিজ করতে, তারাও শ্যুট করতে না পেরে ওড়িশায় চলে গেছে। বাংলায় শ্যুট হলে এখানকার টেকনিশিয়ান, এখানকার অভিনেতারা কাজ পেত। কিন্তু সেটাও চলে গেল। আমার মনে হয়, ফেডারেশনের ভাবা উচিত। কাজ বন্ধ করা কখনও ক্ষমতার পরিদর্শন হতে পারে না, ক্ষমতার পরিদর্শন হল, সবাইকে নিয়ে কাজ করা। সবার বাড়িতে যেন রান্না হয়, সবাই যেন শান্তিতে ঘুমাতে পারে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলাই একজন ভালো প্রেসিডেন্টের কাজ। এই কর্মবিরতি আমি সমর্থন করি না। কোনওদিন লড়াই করে কোনও যুদ্ধের শেষ হয়নি, গায়ের জোরে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না, এটা আমি নয় ইতিহাস বলছে। সেখানে একটা আলোচনা দরকার। কীভাবে আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারি, সেটা আলোচনার'।
দেব মতে, 'আমি অনেকদিন থেকে চুপ ছিলাম। কিন্তু আমার মনে হয়, এবার এই বিষয়ে বলা দরকার। হাতে গোনা চার পাঁচজন প্রযোজকই তো নিয়মিত ছবি বানায়, তাদের ছবিও যদি আটকে দেয়! এইভাবে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না। আমি ৭-৮ বছর প্রযোজনা করছি, আমি সবসময় চেষ্টা করি যে কীভাবে আরও বেশি টেকনিশিয়ানকে দিয়ে কাজ করানো যায়। আরেকটা কঠোর সত্য যে টেকনিশিয়ানরা সবার আগে আয় করে আর সবশেষে প্রযোজক আয় করে আর বেশিরভাগ সময় আয় করেও না। প্রযোজকের ঘরে টাকা ঢুকতে অনেক সময় লাগে। আমি এখনও বাঘাযতীনের টাকা পাইনি। একটা ছবি হিট হলেও লাভের টাকা আসতে ১ বছর। সেই সময় প্রযোজকের ছবি যদি আটকে দেওয়া হয় বা ভুল ন্যারেটিভ তৈরি করা হয়, তাহলে তা ভুল'।
দেবের দাবি, 'আমি ফেডারেশনের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু গায়ের জোরে বেশিদিন চলতে পারে না। আর যে গায়ের জোর দেখায়, তার কখনও কোনও ক্ষতি হয় না। সে একবছর কাজ না করলেও খেতে পাবে, তার সংসারে কোনও ক্ষতি হবে না। কিন্তু টেকনিশিয়ানরা আজ কাজ না করলে তো তাদের ক্ষতি। বুম্বাদা এখন মুম্বইয়েই বেশি কাজ করছে। যাকে ইন্ডাস্ট্রি বলে হয় সেই নিজের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারছে না। যিনি দুই দিন আগে মহানায়ক সম্মান পেলেন তিনি শ্যুট করতে পারছেন না। এরচেয়ে দুঃখের আর কী হতে পারে। আমরা সবাই তাঁকে সম্মান করি, বুম্বাদা সবসময় টেকনিশিয়ানদের পাশে দাঁড়িয়েছে, অথচ আজ তাঁরই শ্যুটিং বন্ধ করে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রী যাকে সম্মান দিচ্ছেন, ফেডারেশন তাঁরই শ্যুটিং বন্ধ করে দিচ্ছে। এটা খুবই অসম্মানজনক। আমরা অ্যাওয়ার্ডে সম্মান পাই না, ভালোবাসায় পাই। যে ৪৫ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রেখেছে, আজকে সেই মানুষটার শ্যুট বন্ধ করে দেওয়া হল। ওনার এখন মুম্বইয়ে বিশাল পরিচয়, তাঁর কাছে অনেক ফোন আসবে, সেখান থেকে অন্যরা বোঝে যে বাংলায় কাজ করা সোজা নয়, এটা খারাপ বার্তা। আমি সবসময় যেটা ঠিক, সেটা ঠিক বলি আর যেটা ভুল, সেটা ভুল। আজ যেটা হল, সেটা ভুল। আমি ফেডারেশনের কাছে অনুরোধ করব, এটা ভাবতে। আমরা আলোচনায় বসার জন্য তৈরি। কেন আজ টেকনিশিয়ানরা এলেন না, আমরা সেটা জানার অপেক্ষায় আছি। কারণ এভাবে কাজ বন্ধ করা কোনও সলিউশন নয়'।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)