Aindrila Sharma : মা নেই, কেঁদেই চলেছে বোজো ও তোজো
ঘড়ির কাঁটা বলছে তখন বাজে দুপুর ১২.৫৯। হঠাত্ই বাড়িতে খারাপ খবর পৌঁছলো। ঐন্দ্রিলার বাড়ি থেকে আগেই তাঁর বাবা-মা পৌঁছে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তাঁর কাছেই পৌঁছলো খবর। ওরা অবলা, ওরা বলতে পারেনা। তবে বাড়িতে থাকতে থাকতে অনেক কথাই বোঝে। চোখ দেখে বোঝার চেষ্টা করে পরিস্থিতি। ঐন্দ্রিলার বাড়িতে থাকা সারাক্ষণ তাঁর খেয়াল রাখার দায়িত্বে থাকা দিদি ডুকরে কেঁদে উঠলেন। অবলা ওরা, সেই থেকেই ওরা ছটফট শুরু করল। ওরা আর কেউ নয়, ঐন্দ্রিলার দুই পোষ্য, বোজো ও তোজো।
Aindrila Sharma, অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়: ঘড়ির কাঁটা বলছে তখন বাজে দুপুর ১২.৫৯। হঠাত্ই বাড়িতে খারাপ খবর পৌঁছলো। ঐন্দ্রিলার বাড়ি থেকে আগেই তাঁর বাবা-মা পৌঁছে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তাঁর কাছেই পৌঁছলো খবর। ওরা অবলা, ওরা বলতে পারেনা। তবে বাড়িতে থাকতে থাকতে অনেক কথাই বোঝে। চোখ দেখে বোঝার চেষ্টা করে পরিস্থিতি। ঐন্দ্রিলার বাড়িতে থাকা সারাক্ষণ তাঁর খেয়াল রাখার দায়িত্বে থাকা দিদি ডুকরে কেঁদে উঠলেন। অবলা ওরা, সেই থেকেই ওরা ছটফট শুরু করল। ওরা আর কেউ নয়, ঐন্দ্রিলার দুই পোষ্য, বোজো ও তোজো।
বাড়িতে থাকলে সারাক্ষণ ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকত বোজো-তোজো। ঐন্দ্রিলার বড় আদরের। এদিক ওদিক ছুটে বেড়াত আনন্দে। ঐন্দ্রিলার মত মিষ্টি একটি মেয়ে যে বাঁচতে চেয়েছিল ওদের সঙ্গেও। খেলতে চেয়েছিল ফাঁকা সময়ে। কোলে নিয়ে ওদের অবুঝ মনকেও বুঝেছিল ঐন্দ্রিলা। ওরাও আশা করে বসেছিল ওদের মা ফিরবে...। অপেক্ষায় ছিল ওরাও। সেই থেকেই অস্বস্তি শুরু...। ঐন্দ্রিলার শববাহী গাড়ি আবাসনে পৌঁছনোর আগেই ওরা নীচে নেমে এসেছিল। অপেক্ষা করছিল...।
মা এল, ওদের মা, কিন্তু প্রচুর মানুষ তখন ঘিরে রয়েছে। মায়ের বন্ধুরা, সহকর্মীরা, পরিবার-পরিজন সকলে। একটু অবাক হয়েই বসেছিল বোজো-তোজো। ঐন্দ্রিলার মা শিখাদেবী ওদের কোলে তুলে নিল। তাঁকে অঝোরে কাঁদতে দেখে গা চেটে পাশে থাকার বার্তা দিল ওরা। এর বেশি ওরা কীই বা বলতে পারে...। ঐন্দ্রিলার কাছে দুই পোষ্যকে নামাতেই ওরা কী করবে বুঝে উঠতে পারছিল না...। মায়ের আদর খেতে এগিয়ে গেল, হাত দিয়ে ডাকলও, কিন্তু মা তখন চিরঘুমের দেশে।
ঐন্দ্রিলার দেহ ঘিরে তখন অসংখ্য ক্যামেরা ঝলসে উঠছে বারবার। পরিবার-পরিজন, প্রতিবেশী তখন আদরের মিষ্টিকে শেষ দেখা দেখতে এসেছেন। ওদের দিকেও তাকিয়ে ছিল অনেকে। কিন্তু ওদের চোখের ভাষা পড়তে পারল কজন। মা যে আর ফিরবেনা কখনও, খেলবেনা ওদের সঙ্গে। তা টের পেয়েও কিছু বলতে পারল না বোজো-তোজো? বাড়ি থেকে টেকনিশিয়ান স্টুডিও হয়ে শ্মশানের দিকে রওনা দিল গাড়ি। ওরা শুধু অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল সেই গাড়ির দিকে যে গাড়ির পিছনে শুয়ে রয়েছে ওদের মা।